ইনকাম বাড়লে খরচও বাড়ে! এটা কন্ট্রোল করার উপায় !

 ইনকাম বাড়লে খরচও বাড়ে! এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার সহজ কিন্তু উপেক্ষিত কৌশল

একজন মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে আয়না দেখে হাসলেন—
কারণ গত মাসে প্রোমোশন পেয়েছেন।
আর এখন নতুন ফোন, নতুন জুতা, নতুন সাবস্ক্রিপশন, নতুন ফুড-অ্যাপের নোটিফিকেশন—সব নতুন নতুন লাগছে।

আয় বেড়েছে, এটা খুবই ভালো কথা।
কিন্তু খরচও যদি দৌড়ের ওপর থাকে, তাহলে শেষ রেজাল্ট একটাই—পকেট ফাঁকা, মন খালি।লাইফস্টাইল ইনফ্লেশন।
এই যেটা হয়, তাকে বলে  আর এটা একেবারেই নীরব এক বন্ধু, যেটা আপনার সাথে চুপচাপ থাকে, তারপর একদিন বলবে,

“দোস্ত, তুই আসলে কিছুই জমাতে পারিসনি।”
চলুন দেখি, কীভাবে এই বিপদসঙ্কেতকে আগেভাগেই এড়িয়ে চলা যায়।

১. আয় বাড়লে খুশি হন, খরচ বাড়াতে যাবেন না

ইনকাম বাড়লে আনন্দ হবে, এটা তো স্বাভাবিক।
কিন্তু সেই আনন্দে যদি আপনি আগে যেটা ১০০ টাকায় খেতেন সেটা ৪০০ টাকায় খাওয়া শুরু করেন, তাহলে এটা উৎসব না—অপচয়।

খুশি হোন, কিন্তু খুশির সীমা থাকুক।

২. “আমি এটা ডিজার্ভ করি” — এই ফাঁদ থেকে বের হন

নতুন চাকরি পেয়েছেন? কাজের চাপ বেড়েছে? আপনি ভাবছেন, একটা ভালো জুতা তো ডিজার্ভ করেনই।
হ্যাঁ, করেন। কিন্তু প্রতিবার যখন ইনকাম বাড়বে, তখন যদি পুরোটাই রিওয়ার্ডে ঢেলে দেন, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য কিছুই থাকবে না।

একটু কড়া কথা বলি —
আপনি ডিজার্ভ করেন একটা নিরাপদ ভবিষ্যৎ।

৩. পুরনো খরচের সাথে বন্ধুত্ব রাখুন

আপনি যদি আগে মাসে ২ বার রেস্তোরাঁয় যেতেন, এখন সেটা হঠাৎ করে ৮ বার হয়ে গেল কেন?
কোন লিখিত নিয়মে আছে যে আয় বাড়লেই পুরনো অভ্যাসগুলো বাতিল করতে হবে?

আপনার পুরনো খরচের সাথে বন্ধুত্ব রাখুন।
ওরাই আপনাকে আগলে রেখেছিল, ভুলে যাবেন না।

এই টেকনিকটা একটু সোজা —
পে-ডে আসলেই সেভিংস অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট একটা টাকা সরিয়ে ফেলুন।
যেন সেটা আপনি ভুলেই যান।

এই ভুলটাই হবে আপনার ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমানি কাজ।

৫. সোশ্যাল মিডিয়ার মায়াজাল থেকে বের হন

ফিডে দেখে মনে হচ্ছে, সবাই ট্রাভেল করছে, শপিং করছে, ক্যাফে যাচ্ছে।
আপনিও ভাবছেন — “আমি কেন বাদ যাব?”

কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন —
সবার গল্পে ফিল্টার থাকে, বাস্তবতা থাকে না।
আপনি নিজের প্ল্যান অনুযায়ী চলুন, অন্যের ইনস্টাগ্রামের রিল দেখে নিজের খরচ বাড়ালে লাভ নেই।

৬. “নো” বলতে শিখুন

বন্ধু বলছে, “ভাই চল একটা দামি রেস্টুরেন্টে যাই।”
আপনি যদি জানেন, সেটা আপনার বাজেটের বাইরে — তাহলে একটা “না” বলা শিখে ফেলুন।
এই না-টাই আপনাকে মাসের শেষে একটা “হ্যাঁ” দেবে—জমানো টাকায়!

৭. রিওয়ার্ড দিন, কিন্তু প্ল্যান করে

নিজেকে রিওয়ার্ড দেওয়াটা খারাপ কিছু না।
তবে সেটা যেন হয় প্ল্যান অনুযায়ী — যেমন,
“এই টার্গেটটা পূর্ণ হলে নিজেকে একটা নতুন বই উপহার দেব।”
এটা হবে আনন্দও, সচেতনতাও।

লাইফস্টাইল ইনফ্লেশন এমন এক জিনিস, যা আপনার আয় বাড়ার আনন্দকে চুপচাপ খেয়ে ফেলে।
আপনি বুঝতেই পারবেন না, কবে খরচগুলো আয়কে ছাড়িয়ে গেছে।

তাই সচেতন থাকুন।
আয় বাড়ুক, খুশি বাড়ুক — কিন্তু খরচ? ওটাকে চা খাইয়ে, গল্প করে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।


পকেট যদি থাকে নিয়ন্ত্রণে, জীবন চলে সিম্পল স্টাইলে।

“ এত কিছু জানলে কী হবে? ”— এই প্রশ্ন করার দিন শেষ! Youman-এ থাকলে বোঝা যাবে, জানা মানেই এগিয়ে থাকা!


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

যে কৌশলে সহজে পড়া মনে রাখতে পারবেন

ভুয়া অফার থেকে নিজেকে বাঁচানোর স্মার্ট উপায় !