সত্যিকারের হ্যাপিনেস কোথায় পাওয়া যায় ?
সত্যিকারের হ্যাপিনেস কোথায় পাওয়া যায়? – বিজ্ঞানের চোখে সুখের খোঁজ!
সকালবেলা চায়ের কাপ হাতে বসে আছেন। জানালার বাইরে নরম রোদ, সামনের টেবিলে প্রিয় বই, মনের মধ্যে একটা শান্তি! এটাই কি হ্যাপিনেস? নাকি হ্যাপিনেস মানে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের টাকা, বা ইনস্টাগ্রামে পারফেক্ট লাইফের পোস্ট?
একটা প্রশ্ন – সুখ আসলে কোথায়? বিজ্ঞান কি বলে? আমাদের মন কি বলে? আসুন, ঘেঁটে দেখি!
হ্যাপিনেস: বিজ্ঞানের মতে কী?
বিজ্ঞান বলে, সুখ কোনো একটা নির্দিষ্ট জিনিস নয়, এটা আসলে একটা ককটেল! মানে, অনেকগুলো অনুভূতির মিশ্রণ!
নিউরোসায়েন্স অনুযায়ী, সুখ আমাদের ডোপামিন, অক্সিটোসিন, সেরোটোনিন আর এন্ডোরফিন নামের চার বন্ধুর কারণে হয়! এগুলো একসঙ্গে মস্তিষ্কে মিউজিক বাজায়, আর আমরা অনুভব করি – "আহা! জীবন সুন্দর!"
তাহলে, সুখ আসলে কীসে পাওয়া যায়?
১। টাকা = সুখ? (কিন্তু কত টাকা?)
বিজ্ঞান বলে, টাকা দরকার, কিন্তু শুধু টাকা সুখ এনে দেয় না!
একটা স্টাডি বলে, বার্ষিক ৭৫,০০০ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮৫ লাখ) পর্যন্ত ইনকাম সুখ বাড়ায়, তার বেশি টাকা মানে বাড়তি চাপ! মানে, আপনি লাখপতি হলেও সুখী নাও হতে পারেন, আর খুব সাধারণ জীবনেও মানুষ দারুণ খুশি থাকতে পারে!
বিল গেটসের একটা ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, "সুখী হওয়ার জন্য আমার জীবনে দরকারি জিনিসগুলো আগেও ছিল, এখনো আছে!"
২। রিলেশনশিপ = হ্যাপিনেস?
কেউ যদি বলে, "আমার জীবন পারফেক্ট হবে, যখন পারফেক্ট পার্টনার পাবো!" তবে তাকে এই খবরটা দিন –
হ্যাপিনেসের সবচেয়ে বড় কারণ রিলেশনশিপ, কিন্তু পার্টনার না থাকলেই দুঃখী হতে হবে—তা নয়!
হাভার্ডের ৭৫ বছরের লম্বা রিসার্চ বলছে, "মানুষের জীবনে আসল সুখ আসে সম্পর্ক থেকে – সেটা বন্ধু, পরিবার বা কমিউনিটির মাধ্যমে!"
৯০ বছরের বৃদ্ধদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, "জীবনের সবচেয়ে দামী জিনিস কী?" প্রায় সবাই বলেছে – "যে মুহূর্তগুলোতে আমরা কাছের মানুষদের সাথে ছিলাম!"
৩। সোশ্যাল মিডিয়া বনাম সত্যিকারের জীবন
সোশ্যাল মিডিয়া দেখে মনে হয়, সবার লাইফ পারফেক্ট!
বেস্ট ফিল্টার, পারফেক্ট এঙ্গেল, সাজানো ক্যাপশন! কিন্তু বাস্তবে? সুখি মানুষরা নাকি কম পোস্ট দেয়!
বেশি সোশ্যাল মিডিয়া = বেশি কম্পেয়ারিজন = কম হ্যাপিনেস
আসল হ্যাপিনেস আসে মোমেন্ট উপভোগ করা থেকে, শেয়ারিং থেকে, রিয়েল কানেকশন থেকে!
২০১৮ সালে এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে ৩০ মিনিটের বেশি ইনস্টাগ্রাম স্ক্রল করে, তাদের মধ্যে স্ট্রেস আর এংজাইটি বেশি!
তাহলে সুখী হওয়ার উপায় কী? (সায়েন্টিফিকলি প্রুভড টিপস!)
ধন্যবাদী হোন – প্রতিদিন ৩টা জিনিস লিখুন, যেগুলো আপনাকে খুশি করে
সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স – দিনে অন্তত ১ ঘণ্টা ফোন ছাড়া থাকুন
অন্যকে সাহায্য করুন – সাহায্য করলে ব্রেইন খুশি হয়ে ডোপামিন রিলিজ করে!
এক্সারসাইজ করুন – এটা "ন্যাচারাল এন্টিডিপ্রেসেন্ট"
ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলুন – বন্ধুদের সময় দিন, কথা বলুন, কানেক্টেড থাকুন
হ্যাপিনেস আসলে কোথায়?
সত্যি বলতে, সুখ একটা গন্তব্য নয়, এটা একটা জার্নি!
আপনি হয়তো বড় চাকরি বা গাড়ির স্বপ্ন দেখছেন, কিন্তু হ্যাপিনেস মানে কেবল বড় স্বপ্ন পূরণ করা নয়। সুখ মানে ছোট ছোট জিনিস এনজয় করা – বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা, বিকেলের বাতাস, প্রিয় গানের মেলোডি!
তাহলে, আর দেরি কেন? আজই নিজের ছোট ছোট হ্যাপিনেস খুঁজতে বের হন!
"এত কিছু জানলে কী হবে?"—এই প্রশ্ন করার দিন শেষ! Youman-এ থাকলে বোঝা যাবে, জানা মানেই এগিয়ে থাকা!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন