সবসময় প্রোডাক্টিভ হওয়া লাগবে না!
সবসময় প্রোডাক্টিভ হওয়া লাগবে না! – কিছু না করাও একধরনের কেয়ার!
(১) একদিন কিছু না করার গল্প
আপনার কি কখনো এমন হয়েছে—একটা ছুটির দিন পেলেন, ভাবলেন আজ অনেক কাজ করবেন। রুম পরিষ্কার করবেন, পড়াশোনা করবেন, নতুন কিছু শিখবেন। কিন্তু সকাল থেকে সোফায় বসে শুধু ফোন স্ক্রল করছেন। ঘড়ি দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে গেছে, কাজের কাজ কিছুই হয়নি!
এরপরই শুরু হলো সেই ভয়ঙ্কর অনুভূতি—"আজ কিছুই করলাম না! পুরো দিনটা নষ্ট!"
কিন্তু সত্যি বলতে, দিনটা নষ্ট হয়নি! কারণ, কিছু না করাও একধরনের কেয়ার।
(২) "কিছু না করা" কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
আমাদের সমাজ Productivity-কে এমনভাবে গ্লোরিফাই করে যে, অলস বসে থাকাটাকে অপরাধ মনে হয়। অথচ বিজ্ঞান বলছে, কিছু না করা মাঝে মাঝে সবচেয়ে জরুরি সেলফ-কেয়ার!
নিউরোসায়েন্স ফ্যাক্ট:
আমাদের ব্রেনের Default Mode Network (DMN) তখনই অ্যাকটিভ হয়, যখন আমরা কিছু না করি। এই DMN কিন্তু নতুন আইডিয়া তৈরি করে, স্ট্রেস কমায়, এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে!
কিন্তু আমরা কি করতে পারি?
"আমি অলস নই, আমি আমার মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিচ্ছি"—এই মন্ত্রে বিশ্বাস রাখা!
(৩) কিছু না করার ৫টা বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
✅ ১. ব্রেনের জন্য রিচার্জ টাইম:
ব্রেন সারাদিন অনেক তথ্য প্রসেস করে। কিছু না করলে সে একটু রিফ্রেশ হতে পারে!
✅ ২. ক্রিয়েটিভিটি বাড়ায়:
নতুন আইডিয়া আসার জন্য মস্তিষ্ককে "শান্ত" থাকতে দিতে হবে। সেরা লেখক, শিল্পী, বিজ্ঞানীরা সবাই "বোরডম" থেকে দারুণ আইডিয়া পেয়েছেন!
✅ ৩. স্ট্রেস কমায়:
অতিরিক্ত কাজ, ননস্টপ চিন্তা = স্ট্রেস। কিন্তু কিছু না করলেই Cortisol (স্ট্রেস হরমোন) কমতে শুরু করে!
✅ ৪. সেলফ-আওয়ারনেস বাড়ায়:
চুপচাপ বসে থাকলে নিজের সাথে সময় কাটানো হয়, নিজের চিন্তাগুলো বুঝতে পারা যায়!
✅ ৫. সম্পর্ক ভালো রাখে:
অতিরিক্ত ব্যস্ত থাকলে কাছের মানুষদের জন্য সময় থাকে না। কিন্তু সময় নিলে সম্পর্কও ভালো হয়!
(৪) তাহলে কীভাবে "কিছু না করা" উপভোগ করবেন?
১. "Doing Nothing" লিস্ট বানান!
একদম সিম্পল লিস্ট হবে। যেমন—
✅ এক কাপ কফি নিয়ে জানালার পাশে বসা
✅ গাছের দিকে তাকিয়ে থাকা
✅ মেঘ দেখা
✅ নদীর পাড়ে বসে থাকা
✅ শুধু চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকা
এগুলো খুব ছোট ছোট জিনিস, কিন্তু মন ভালো করার জন্য পারফেক্ট!
২. "গিল্টি" ফিল করা বন্ধ করুন!
কিছু না করলে অনেকেই মনে করে, "আমি অলস হয়ে যাচ্ছি!" কিন্তু এই চিন্তা বাদ দিন।
আপনি যদি দিনে ১০ মিনিটও কিছু না করে বসে থাকেন, সেটাই আপনার ব্রেনের জন্য বিশ্রাম!
৩. "Silent Hour" রাখুন!
দিনের মধ্যে অন্তত ৩০ মিনিট এমন রাখুন, যেখানে কোনো কাজ নেই। ফোন নেই, মেসেজ নেই, শুধু আপনি আর আপনার সময়!
(৫) আজই ট্রাই করুন!
আমাদের ব্রেনকে মাঝে মাঝে "ব্রেক" দিতে হবে। তাই নিজেকে অনুমতি দিন কিছু না করার জন্য!
পরেরবার কেউ বলবে, "তুমি এত অলস কেন?"
আপনার উত্তর হবে—
"আমি অলস নই, আমি নিজের জন্য সময় নিচ্ছি!"
"বড় হয়ে কী হব?" এই টেনশন বাদ! Youman আছে, শেখার মজা নিন, সিদ্ধান্ত একদম অনপয়েন্ট নিন!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন