"পরে পড়বো" এই বদ অভ্যাস থেকে বের হওয়ার উপায় !

"পরে পড়বো" এই বদ অভ্যাস থেকে বের হওয়ার উপায়!
সকালবেলা উঠে ঠিক করেছেন —
"আজ কোনোভাবেই দেরি করবেন না! একদম মন দিয়ে পড়বেন !"


বই খুলে বসার পাঁচ মিনিটের মধ্যে..
একটু ফেসবুক স্ক্রল করা ।
এক টুকরো গান শোনা ।
তারপর হালকা কিছু খাওয়ার কথা মনে পড়ে!

এভাবে চলতে চলতে বিকেল হয়ে যায়!
আপনি ভাবেন, "ঠিক আছে, রাতে একদম সিরিয়াস হয়ে পড়বেন !"

কিন্তু রাতেও ঠিক একই গল্প!
পরের দিন এসে আবার ৩একই গল্প , "কাল থেকে সিরিয়াসলি পড়বো!"

এটাই হলো Procrastination, মানে কাজ ফেলে রাখা!
কিন্তু কেন এমন হয়? আর কীভাবে এই দুষ্টচক্র থেকে বের হওয়া যায়?
আজ এটা নিয়েই কথা বলি!
Procrastination কেন হয়?

i )  আমাদের ব্রেইন "Instant Gratification" চায়!
মস্তিষ্ক একটা অলস জিনিস! সে কঠিন কিছু করতে চায় না!
সে সবসময় চায় সহজ আর আনন্দদায়ক কিছু করতে।

পড়া vs. ফেসবুক? ব্রেইন বলবে— ফেসবুক!
অংক vs. ইউটিউব ভিডিও? ব্রেইন বলবে— ইউটিউব!

কারণ, ফেসবুক বা ইউটিউব সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ দেয়, কিন্তু পড়াশোনা পরে সফলতা দেয়।

ii )  "আমি পরে করলেই হবে!" এই মিথ্যে বিশ্বাস
আপনি মনে মনে ভাবেন — "আরও একটু সময় আছে, পরে করলেই হবে!"
কিন্তু সত্যি বলতে, সেই "পরে" কখনো আসে না!

iii )  পারফেকশনিজম – "পারফেক্ট সময়ের অপেক্ষা!"
অনেকে ভাবে, "আমি পড়বো, কিন্তু পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে!"
কিন্তু পারফেক্ট সময় বলে কিছু নেই!

iv) কাজের লিস্ট বড় হয়ে গেলে ভয় লাগে!
যত কাজ জমতে থাকে, ততই মনের মধ্যে চাপ বাড়ে।
তখন মস্তিষ্ক বলে— "এই কাজ এত কঠিন! আগে একটু আরাম করি!"

এইভাবেই আমরা পড়াশোনা ফেলে রাখি!

Procrastination থেকে বের হওয়ার উপায়!

v )  মিনিট রুল – "শুধু ৫ মিনিট শুরু করো!"
যেকোনো কাজ শুরু করাই সবচেয়ে কঠিন!

তাই, মনে মনে বলো—
"আমি মাত্র ৫ মিনিট পড়বো!"

মজার ব্যাপার হলো, ৫ মিনিট পড়তে গেলে ব্রেইন গতি পেয়ে যায়, আর তখনই মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়ে যায়!

২। "Pomodoro টেকনিক" ইউজ করেন !
এটা হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি!
২৫ মিনিট পড়েন !
তারপর ৫ মিনিট ব্রেক নিন !
এইভাবে ৪ বার করেন, তারপর ৩০ মিনিট বড় ব্রেক নিন !

এই পদ্ধতিতে ব্রেইন ক্লান্ত হয় না, আবার ফোকাসও থাকে!

৩। "Eisenhower Matrix" – কোনটা আগে করবেন ?
অনেক সময় এত কাজ জমে যায় যে, কোনটা আগে করবো বুঝতে পারি না!

তখন এই চারটি ভাগ করে নিন —
  • জরুরি + গুরুত্বপূর্ণ → আগে করেন !
  • জরুরি না + গুরুত্বপূর্ণ → শিডিউল করেন!
  • জরুরি + গুরুত্বহীন → অন্যকে দিয়ে করিয়ে নিন !
  • জরুরি না + গুরুত্বহীন → বাদ দিয়ে দিন!

এভাবে কাজ ভাগ করে নিলে আর কোনো কাজ ফেলে রাখা লাগবে না!

৪. নিজের জন্য পুরস্কার ঠিক করে ফেলুন !
মস্তিষ্ক আনন্দ চায়, তাই তাকে চালাতে হলে পুরস্কার দিতে হবে!

যেমন—
"আজ ১ ঘণ্টা মন দিয়ে পড়লে, ১০ মিনিট ইউটিউব দেখবো!"
"আজকের কাজ শেষ করলে একটা ভালো খাবার খাবো!"

এভাবে ছোট ছোট পুরস্কার দিলে ব্রেইন কাজ করতে মোটিভেটেড থাকবে!

৫। "Accountability Partner" রাখেন !
আমরা অন্যদের সামনে প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা রাখতে চাই!

তাই, আপনার কোনো বন্ধুকে বলে রাখেন —
"আমি আজ ২ ঘণ্টা পড়বো, তুমি চেক করবে!"

এভাবে কাউকে জানানোর ফলে আপনার ভেতর একটা দায়বদ্ধতা আসবে, আর তখন আর ফেলে রাখতে ইচ্ছা করবে না!

৬। "সবচেয়ে কঠিন কাজ আগে করা !"
যে কাজ করতে সবচেয়ে ভয় লাগে, সেটা আগে শেষ করে ফেলা উচিত !

সকালেই অংকের কঠিন অধ্যায় শেষ করেন !
সকালে ইতিহাসের বড় অধ্যায় পড়ে নিন !

কঠিন কাজ আগে করলে, পরে সহজ কাজগুলো আরাম করে করা যায়!

এখনই শুরু করে দিন !

Procrastination মানে হলো "নিজের ভবিষ্যৎকে ঠকানো!"
তাই আর ফেলে না রেখে আজই, এখনই, এই মুহূর্তে যেটা দরকার সেটা শুরু করেন !

একবার শুরু করতে পারলেই দেখবেন, কাজ সহজ হয়ে গেছে!

Youman কমিউনিটিতে যোগ দিয়ে, আপনার সফলতার যাত্রা শুরু করুন !

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগে কেন? সলিউশন এখানে !

ভুয়া অফার থেকে নিজেকে বাঁচানোর স্মার্ট উপায় !

যে কৌশলে সহজে পড়া মনে রাখতে পারবেন