স্টাডির জন্য পারফেক্ট প্লেলিস্ট কেমন হওয়া উচিত?

স্টাডির জন্য পারফেক্ট প্লেলিস্ট – কান দিয়ে মগজে ঢুকে যাওয়া সুরের গল্প
একটা সময় ছিল, বই খুললেই মনোযোগ এমনভাবে আসতো, যেন কেউ মাথার মধ্যে আলো জ্বালিয়ে দিয়েছে।


এখন?
বই খুললেই Notification আসে, ব্রেইন বলে “একটু Instagram দেখে নেই”, তারপর আর কিছুই হয় না।

তবে একটা জিনিস আছে, যেটা ঠিকভাবে ব্যবহার করলে – মনোযোগ ধরা দেয়।
মিউজিক।
মানে, শুধু গান না – ঠিকমতো প্লেলিস্ট।
যেটা পড়ার সময় আপনার মাথার মেঘ কেটে ফেলে সূর্যের আলো ঢুকিয়ে দেয়।

প্লেলিস্ট কি ম্যাজিক?

ধরেন, আপনি একটা চ্যাপ্টার পড়ছেন। পাশে বাজছে কোনো বেজ মিউজিক – লিরিক নেই, শব্দগুলো এমনভাবে সাজানো যেন মাথায় ঝিরঝির করে বয়ে যাচ্ছে।
এই শব্দগুলো সোজা মস্তিষ্কে ঢুকে গিয়ে বলে – “চুপচাপ বসো, পড়া শুরু করো।”

এটা হলো sound-based concentration।
যা আপনাকে distraction থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় ফোকাসের ভেতরে।

তাহলে কেমন হওয়া উচিত পারফেক্ট স্টাডি প্লেলিস্ট?

সোজা কথা – আপনি যা শুনলে মাথা হালকা হয়, মন শান্ত হয়, আর মুড তৈরি হয় – সেইটাই।

তবে কিছু ফর্মুলা আছে, যেগুলো বেশিরভাগ মানুষকেই কাজ দেয়:

১. No lyrics please!

মাথা যখন পড়ার চেষ্টায় ব্যস্ত, তখন কেউ যদি গান গেয়ে গেয়ে বলে “তুমি আসবে বলে...”, তখন তো পড়াটা “তুমি যাবা কোথায়” টাইপ হয়ে যাবে।

তাই স্টাডি প্লেলিস্টে lyric-free মিউজিকই বেস্ট।
Lo-fi, Chillhop, Piano covers – এইগুলো যেন ফ্রেন্ডলি ভূতের মতো – কাজের সময় পাশে বসে থাকে, কিন্তু একটুও বিরক্ত করে না।

২. Beats matters – বীট না থাকলে হালকা ঘুম আসবে

আপনি যদি এমন মিউজিক চালান, যেখানে শুধু হাওয়া বয়ে যাচ্ছে – মাথাও ঘুরে যাবে।
তাই একটু consistent beat দরকার – যেন মাথায় টুকটুক করে চলে, কিন্তু নাচতে না হয়।

“Lo-fi girl” বা “Study With Me” টাইপ YouTube চ্যানেলগুলোয় সুন্দর সব ট্র্যাক আছে।

৩. 60–70 BPM is gold

BPM মানে beats per minute।
যেটা 60–70 এর মধ্যে থাকে, সেটা আপনার হার্টবিটের মতো।
তাই আপনি শুনলেই মনে হয় – “আহা, পড়ি!”

কিছু classical soundtrack বা instrumental movie scores এই রেঞ্জে পাওয়া যায়।


৪. ভোল পাল্টানো প্লেলিস্ট নয়, যেন background shadow হয়

একটা ভুল অনেকে করেন – একেকটা গান চালিয়ে মনযোগ হারিয়ে ফেলে,
“এই গানটা শেষ, এখন পরেরটা ভালো লাগবে কিনা?”
এই চিন্তাই পড়ে ফেলে দেয়।

তাই একটা curated, আগে থেকে তৈরি করা প্লেলিস্ট রাখুন।
যেটা পড়া শুরু করার সময় চালিয়ে দিয়ে আপনি নিজেই ভুলে যাবেন – মিউজিক চলছে।


 কিছু পরামর্শ যা অদ্ভুত হলেও কাজের

  • Rain sound + soft piano – মনে হয় আপনি লাইব্রেরির পাশে জানালায় বসে আছেন, বৃষ্টি পড়ছে।

  • Game soundtrack – হ্যাঁ, যেসব গেমে স্ট্র্যাটেজি লাগে, তাদের মিউজিক এতটাই ফোকাসড থাকে, যে মাথা হঠাৎ করে ঘোরা শুরু করে ফেলে।

  • Ambient café sounds – এক কাপ কফি, হালকা কথাবার্তার আওয়াজ আর মৃদু মিউজিক – ঠিক যেন বিদেশি লাইব্রেরিতে বসে আছেন।

তাহলে নিজের মতো করে বানিয়ে ফেলুন নিজের স্টাডি প্লেলিস্ট

Spotify, YouTube, Apple Music – সবখানে এখন এমন প্লেলিস্ট আছে।
তবে আপনি চাইলে নিজের মতো করে বানাতে পারেন।
শুনুন, বেছে নিন, নিজের মুড বোঝার চেষ্টা করুন।

আর একবার যদি আপনি প্লেলিস্টের জাদু ধরতে পারেন,
তাহলে দেখবেন, বইয়ের পাতাগুলো এমনভাবে পড়া শুরু করেছে – যেন গান আর পড়া একসাথে নাচছে।

পড়ার মুড তৈরি হয় না বলেই আমরা অনেক সময় হাল ছেড়ে দিই।
কিন্তু মুডকে ডাকা যায় – মিউজিক দিয়ে।

ঠিক যেমন কেউ গল্প পড়ার সময় একটা আলো জ্বালিয়ে নেয়, আপনি নিজের পড়ার সময় একটা সাউন্ডস্কেপ বানিয়ে নিতে পারেন।

তখন মিউজিক শুধু শব্দ থাকবে না, হয়ে উঠবে আপনাকে শেখানোর এক অনলাইন শিক্ষক।
যে বলে – “চুপ করে বসো, এখন পড়ার সময়।”

জীবনের টুকরো সমস্যাগুলো আসলে তথ্যের অভাব।

Youman-এর সাথে থাকলে, সমাধান খুঁজে নিতে সময় লাগে না।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগে কেন? সলিউশন এখানে !

ভুয়া অফার থেকে নিজেকে বাঁচানোর স্মার্ট উপায় !

যে কৌশলে সহজে পড়া মনে রাখতে পারবেন