বড় কিছু কেনার জন্য টাকা জমানোর টেকনিক

 বড় কিছু কেনার জন্য টাকা জমানোর টেকনিক – স্ট্রেস ছাড়াই স্বপ্নপূরণ

জীবনটা ক্যারাম বোর্ড। মাঝে মাঝে একটা ‘কোইন’ কিনতে ইচ্ছে করে – দামি একটা ফোন, পছন্দের বাইক, বা হয়তো স্বপ্নের ট্যুর। কিন্তু হাতের গুঁটি গুলো যদি শেষ হয়ে যায়, তখন তো সব খেলা মাটি !

এই জন্যই টাকা জমানোর টেকনিক জানা থাকা দরকার। আপনাকে আজ বলব, কীভাবে স্ট্রেস ছাড়া একটা বড় কিছু কেনার জন্য শান্তভাবে, মাথা ঠান্ডা রেখে টাকা জমানো যায়।


১. আগে ঠিক করুন ‘কেনার কারণটা’

আপনি কী কিনতে চান সেটা যত না গুরুত্বপূর্ণ, কেন কিনতে চান সেটা অনেক বেশি জরুরি। কারণ যদি মজবুত হয়, তাহলে প্ল্যানও হবে স্টেডি।
জানেন তো, ইমোশন ছাড়া সেভিংস টিকেই না। তাই নিজের সাথে একটু কথা বলুন। দরকারে চুপচাপ ছাদে উঠে এক কাপ চা নিয়ে ভাবুন। এই জিনিসটা আমার কেন দরকার?


২. একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা সেট করুন

সময় ঠিক না থাকলে টাকা জমানো কখনই সিরিয়াস হয়ে উঠবে না।
ধরুন, আপনি ৬ মাস পর একটা ল্যাপটপ কিনবেন — তাহলে প্রতি মাসে কতো টাকা জমালে হবে সেটা হিসেব করা সহজ হয়।
অন্যভাবে বললে, জীবনটা একটা ছোট ছোট ডেডলাইনের সমষ্টি। আর এই ডেডলাইনগুলোই আমাদের মনের মধ্যে গতি এনে দেয়।

৩. একাউন্ট আলাদা, চিন্তাও আলাদা

যেই টাকা আপনি জমাবেন, সেটা রাখার জায়গাটা আলাদা হওয়া জরুরি। অন্য খরচের সাথে মিশে গেলে সেটা আর "সেভিংস" থাকবে না, হয়ে যাবে “শুধু ছিলাম একটু, এখন নেই!”
চাইলে একটা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে নিতে পারেন। নাম দিতে পারেন “আমার স্বপ্নের গাধা” বা “টাকা জমা জমি” – নামে কিছু যায় আসে না, টাকাটা যেন নাড়াচাড়া না করে সেটাই আসল।

৪. ছোট ছোট কাটছাঁট

প্রতিদিনের খরচে একটু চোখ রাখলেই দেখা যাবে, অনেক খরচই অপ্রয়োজনীয়।
একটা উদাহরণ দিই — অফিসে রোজ কফি ১২০ টাকা। সপ্তাহে ৫ দিন মানে ৬০০ টাকা। মাসে ২৪০০ টাকা!
তার বদলে যদি আপনি সপ্তাহে দুই দিন নিজে বানানো কফি খেতেন, তাহলে ওই টাকা দিয়ে আপনার কাঙ্ক্ষিত জিনিস আরও এক ধাপ কাছে আসত।

৫. সেলিব্রেট করুণ, কিন্তু হালকা হাতে

মাঝেমধ্যে আপনি টাকা জমাতে পেরেছেন — এই খুশি উদযাপন করা দরকার। তবে সেটা যেন হয় লাইট মুডে।
একটা ছোট চকলেট, বা প্রিয় বইয়ের পাতা উল্টানো — এসব উদযাপন সাশ্রয়ী, কিন্তু মনের মধ্যে আলো জ্বালায়।
এটা খুব দরকার, কারণ টাকা জমানো যেন বোঝা না হয়ে যায়।

৬. অনুপ্রেরণা রাখুন কাছে

মোটিভেশন হারিয়ে গেলে সেভিংস-ও ড্রেইন হয়ে যাবে। আপনার ফোনে পছন্দের জিনিসটার একটা ছবি রাখুন, ওয়ালপেপারে সেট করুন।
প্রতিদিন চোখে পড়লে মনে থাকবে — “এই জন্যই তো আমি নিজেকে কন্ট্রোল করছি।”

৭. হুট করে কিনবেন না

সেল দেখলেই ক্লিক করে অর্ডার দেওয়া একটা মিষ্টি অভ্যাস, কিন্তু এই অভ্যাসেই বাজেটের বারোটা বাজে।
বড় কিছু কেনার আগে নিজেকে সময় দিন। আপনি যেটা কিনতে চাচ্ছেন, সেটার দাম কি একটা-দুইটা মাস পর কমে আসবে? বিকল্প আছে কি?
স্মার্ট মানুষরা বলে – “দেখে শুনে তারপর কিনো, শুধু দেখে কিনলে ফাঁদে পড়ো।”


টাকা জমানো একটা ‘সাইলেন্ট সুপারপাওয়ার’।
বাহির থেকে বোঝা যায় না, কিন্তু ঠিক সময় হলে সেটা জাদুর মতো কাজ করে।
আপনার স্বপ্নের জিনিসটা হয়তো একটু সময় নেবে, কিন্তু আপনি যদি একটু কৌশলী হন ওটা আপনার হাতেই থাকবে, ক্যারাম বোর্ডের শেষ শটের মতো।


আপনার গেম, আপনার শট – কিন্তু টেকনিকটা আমরা জানিয়ে দিলাম। এখন বাজিমাত আপনার ! Youman আপনার পাশে, আপনার প্ল্যানের সাথে।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

এই বাজেটিং মেথড ফলো করলে আর টাকা শেষ হবে না!

সস্তায় টিকিট কাটার মাস্টার টিপস!

সত্যিকারের হ্যাপিনেস কোথায় পাওয়া যায় ?