চাকরি বদলানো কি ক্যারিয়ারের জন্য ভালো, নাকি বিপদ?

আপনার কি একটা চাকরিতে বছর পার হতেই আর থাকতে ইচ্ছা করছে না? মনে হচ্ছে, নতুন একটা জায়গায় গেলে হয়তো গ্রোথ হবে, নতুন সুযোগ আসবে, আর একটু বেশি টাকা পকেটে ঢুকবে? আবার মনে হচ্ছে, বারবার চাকরি বদলানো কি ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর? 


ফ্রেসারদের জন্য job hopping (বারবার চাকরি বদলানো) একটা হট টপিক! আগের জেনারেশন যেখানে এক চাকরিতে ১০-১৫ বছর কাটিয়ে দিত, আমরা সেখানে ২-৩ বছরেই বোর হয়ে যাই! কিন্তু প্রশ্ন হলো, এটা কি স্মার্ট মুভ, নাকি বিপদ ডেকে আনতে পারে?  বিষয়টা খোলাসা করি!


চাকরি বদলানোর ভালো দিকগুলো


১। বেশি টাকা, বেশি সুযোগ!

এক জায়গায় বসে থাকলে স্যালারি বাড়ে ধীরে, কিন্তু নতুন চাকরিতে গেলে ১৫-৩০% বেশি পেমেন্ট পাওয়ার চান্স থাকে! নতুন স্কিলে এগিয়ে গেলে তো কথাই নেই!

     

২। ফাস্ট ক্যারিয়ার গ্রোথ 

নতুন জায়গায় গেলে নতুন চ্যালেঞ্জ আসে, শেখার সুযোগ হয় বেশি! ফলে ক্যারিয়ার আগায় দ্রুত। একই জায়গায় পড়ে থাকলে কমফোর্ট জোন ধরে ফেলে, যা একদমই ভালো না!


৩। নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়

প্রতিবার চাকরি বদলালে নতুন কলিগ, বস, ক্লায়েন্ট – সবার সাথে কানেকশন তৈরি হয়! আর আজকের প্রফেশনাল ওয়ার্ল্ডে নেটওয়ার্ক মানেই শক্তি।


৪। বেটার ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স 

যদি একটা কোম্পানির কালচার ভালো না লাগে বা ওভারওয়ার্কে পিষতে থাকেন, তাহলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসাই বেস্ট! হ্যাপি লাইফ = প্রোডাক্টিভ ক্যারিয়ার!


চাকরি বদলানোর রিস্কগুলোঃ 


১। রিজিউমিতে ‘Job Hopper’ ট্যাগ 

HR-রা অনেক সময় ভাবে, আপনি যদি বারবার চাকরি বদলান, তাহলে স্ট্যাবিলিটি নেই! ফলে বড় কোম্পানিগুলো আপনাকে নিতে একটু ভাববে।


২। সিকিউরিটি কমে যায়

নতুন অফিসে গেলে সবকিছু আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। নতুন বস, নতুন কাজ – মানিয়ে নিতে কষ্ট হলে আবারও চাকরি বদলানোর চিন্তা আসতে পারে, যা একধরনের নেগেটিভ লুপ!


৩। লং-টার্ম বেনিফিট মিস করতে পারেন 

অনেক কোম্পানির pension, gratuity, promotions, stock options বা ভালো বোনাস পেতে হলে কিছু বছর থাকতে হয়! কিন্তু বারবার লাফ দিতে গেলে এইসব মিস হতে পারে।


তাহলে কী করা উচিত?

১। স্মার্ট জব হপিং করেন! চাকরি বদলানো দোষের কিছু না, কিন্তু কোনো কারণ ছাড়া বদলালে ক্যারিয়ার স্ট্যাবল হবে না। যদি নতুন চাকরি  আপনাকে বেটার স্কিল, বেশি টাকা, ভালো ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স বা ভালো ক্যারিয়ার গ্রোথ দেয়, তাহলে GO FOR IT! 


২। ৩-৫ বছর ধরে থাকাটা আদর্শ! তবে একই পজিশনে আটকে গেলে বা শেখার সুযোগ না থাকলে ২-৩ বছর পরেই সরে যাওয়াটা স্মার্ট মুভ!


৩। রিজিউমি ব্রেকডাউন এড়িয়ে চলেন! প্রতি ৬-৮ মাস পরপর বদলালে HR-রা ভাবতে পারে, আপনি কোনো কাজেই থিতু হতে পারেন না! তাই জাস্টিফাইড জব চেঞ্জ করেন।


৪। নতুন চাকরি পাওয়ার আগেই বর্তমান চাকরি ছাড়বেন না! নইলে ইনকামের গ্যাপে পরতে পারেন, যা ফাইন্যান্সিয়ালি ও মেন্টালি স্ট্রেসফুল হতে পারে!


শেষ কথা চাকরি বদলানো উচিত নাকি, না?উত্তর যদি হয় Yes! যদি নতুন চাকরিতে বেশি স্কিল, ভালো পরিবেশ আর বেশি টাকা!

 আর উত্তর যদি হয় No! যদি বারবার চাকরি বদলানো আপনার রিজিউমিকে দুর্বল করে দেয়!


সিদ্ধান্ত আপনার ! ক্যারিয়ারের দায়িত্ব নিজের হাতে নিন , প্ল্যান করেন এগিয়ে যান ! 

Youman কমিউনিটির অংশ হয়ে, আপনি আরও নানা ধরনের কৌশল এবং প্রাক্টিক্যাল টিপস পেতে পারেন যা জীবনে বাস্তবায়িত করা সহজ। আমাদের সাথে থাকুন এবং জীবনকে আরও সুস্থ ও সফল করার জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক সঙ্গী হোন।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

প্রতিদিনের জীবন সহজ করার ১০টি প্রযুক্তি টিপস

বেড়াতে যাবেন কোথায় ? কেন?

প্যাসিভ ইনকামে ফোকাস