বসের সাথে স্মার্টলি সম্পর্ক গড়ে তোলার কৌশল

আজ হাসানের ঘুম আসছে না। ছাদে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে রাগে গজগজ করতে লাগলেন। কারণ?
বস— তপন সাহেব।
দুপুরে মিটিংয়ের সময় তপন সাহেব তাঁকে বলেছিলেন, “আপনার রিপোর্টের গ্রাফগুলোর কালার একদমই মানানসই না। একটু রুচিশীল হন!”
এই একটা কথা শুনেই হাসানের মনে হলো, “বস আমাকে সহ্যই করতে পারেন না। আমার রিপোর্টের কালার নিয়েও ইগো সমস্যা!”


আকাশের তারা ঝলমল করছে, কিন্তু হাসানের মাথায় শুধু ইনক্রিমেন্ট কাটা যাওয়ার ভয় আর অফিসের রাজনীতি!

কিন্তু সত্যিটা হলো, বসেরা শত্রু নন। তাঁরা রোবটও নন।
তাঁরা মানুষ, তাঁদেরও চাওয়া-পাওয়া আছে।

আর বসের সাথে স্মার্টলি সম্পর্ক গড়তে পারলে, চাকরির জার্নিটা অনেক মসৃণ হয়ে যায়!

তাহলে, কীভাবে? আসুন দেখি!


১। বস ভালো না খারাপ, সেটাই কি আসল বিষয়?

প্রথমেই একটি ভুল ধারণা ভাঙানো দরকার— সব বস খারাপ নন, আবার সব বস ভালোও নন।

কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আপনি একটি ভুল করলেই বস আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন।
তাঁরা আসলে চান, আপনি ভালো পারফর্ম করুন, যাতে পুরো টিমের ইমেজ ঠিক থাকে।

আপনি যদি বসকে “বিরক্তিকর মানুষ” হিসেবে দেখেন, তাহলে অফিসের জীবন কঠিন হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি তাঁকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন, তাহলে চাকরিটা হয়ে যাবে ক্যারিয়ারের মাস্টারক্লাস!


২। বসের ভাষা বুঝতে হবে! (কোড ব্রেক করুন!)

প্রত্যেক বসের একটি নির্দিষ্ট ভাষা থাকে, যেটা বুঝতে পারলেই জীবন সহজ হয়ে যায়।

কিছু উদাহরণ দিই—

যদি বস বলেন, “আমরা এই প্রজেক্টের ব্যাপারে একটু ‘এফোর্ট’ বাড়াতে পারি।”
                                এর মানে? রাত ৯টা পর্যন্ত অফিস করতে হতে পারে!

যদি বস বলেন, “আপনার আইডিয়াটা বেশ ইন্টারেস্টিং।”
                              এর মানে? তিনি এখনো পুরোপুরি রাজি হননি!

যদি বস বলেন, “আমি আপনার কাজ নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট।”
                              এর মানে? পরবর্তী প্রজেক্ট আপনার ঘাড়ে চাপতে যাচ্ছে!

বসের ভাষা ডিকোড করতে পারলে, অফিস লাইফ এক লেভেল সহজ হয়ে যাবে!


৩। স্মার্টলি কথা বলুন, তেল মারা নয়!

অনেকে বসের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ার মানে ধরে নেন— চা নিয়ে যাওয়া, কফি বানানো, বা দরজায় দাঁড়িয়ে ‘স্যার’ বলা।

তেল মারা আর স্মার্ট কমিউনিকেশন এক জিনিস নয়!

বসের প্রয়োজন বুঝুন। তাঁর কাজ সহজ করতে পারলে, তিনি আপনাকে সাপোর্ট দেবেন।
সহযোগিতাপূর্ণ হন, তবে বাড়াবাড়ি করবেন না।
নেতিবাচক কথা কম বলুন। কারো গসিপ করার চেয়ে নিজের কাজে ফোকাস করুন।
নিজেকে ব্র্যান্ড বানান। যদি বস আপনাকে "নির্ভরযোগ্য" মনে করেন, তাহলে আপনার ওপর বেশি বিশ্বাস রাখবেন।


৪। কখন বসের সাথে পাংকা হওয়া যাবে না?

কিছু কিছু ভুল করলে, বস আপনাকে ব্ল্যাকলিস্টে ফেলে দিতে পারেন!

🛑 বসের সাথে তর্কে যাবেন না (বিশেষ করে মিটিংয়ে)
🛑 সবার সামনে বসের ভুল ধরিয়ে দেবেন না
🛑 ইমপ্রেস করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না (বস এগুলো ধরে ফেলেন!)
🛑 বসের সাথে গোপনে রাজনীতি করার চেষ্টা করবেন না (শেষে উল্টো বিপদে পড়বেন!)

ট্রিক:
যদি বসের কোনো সিদ্ধান্ত বা মতামত অপছন্দ হয়, সরাসরি মিটিংয়ে বলার চেয়ে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলুন।

৫। বসকেও মানুষ হিসেবে ট্রিট করুন!

বসদেরও চাপ থাকে।
তাঁদেরও চিন্তা থাকে— কোম্পানির টার্গেট, ম্যানেজমেন্টের চাপ, পারসোনাল লাইফের সমস্যা।

আপনি যদি একটু ইমোশনালি ইন্টেলিজেন্ট হন, তাহলে তিনি আপনাকে টিমের মেইন প্লেয়ার মনে করবেন।

যখন ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠবে?
✔ যখন আপনি নিজের কাজ ঠিকঠাক করবেন!
✔ যখন বস বুঝবেন, আপনি তাঁর টিমকে সাপোর্ট দিচ্ছেন!
✔ যখন আপনি রেগুলার কাজের পাশাপাশি সমস্যা সমাধান করছেন!

শেষ কথা: বসের সাথে যুদ্ধ নয়, সম্পর্ক গড়ুন!

একটি বিষয় মনে রাখুন—
চাকরি করা মানে বসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা নয়, বরং স্মার্টলি খেলা!

যদি বসের সাথে একটি ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে প্রমোশন, ইনক্রিমেন্ট— সবই সহজ হয়ে যাবে!

তাই কাল অফিসে গিয়ে বসকে দেখে একটা হাসি দিন, আর মনে মনে বলুন—

"আপনি শত্রু নন, বস। আপনি আমার ক্যারিয়ারের একটি চ্যালেঞ্জ মাত্র!"

যদি এ রকম আরও দারুণ টিপস আর ইনফো পেতে চান, তাহলে Youman কমিউনিটিতে যোগ দিন। প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং চলুন একসাথে এগিয়ে যাই! 


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

এই বাজেটিং মেথড ফলো করলে আর টাকা শেষ হবে না!

সস্তায় টিকিট কাটার মাস্টার টিপস!

সত্যিকারের হ্যাপিনেস কোথায় পাওয়া যায় ?