লাগেজে কম জিনিস, কিন্তু সবকিছু থাকবে!
লাগেজে কম জিনিস, কিন্তু সবকিছু থাকবে! | স্মার্ট প্যাকিং হ্যাকস
রাত তিনটা বাজে। আপনাকে কাল সকাল সাতটায় ফ্লাইট ধরতে হবে। অথচ লাগেজের এক কোণা পর্যন্ত গুছানো হয়নি। আপনি কিছুক্ষণ ব্যাগের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তারপর আনমনে ভাবলেন—
“আহা! এই কাজটা কেন মানুষ নিজের ইচ্ছায় করে!”
১। ব্যাগে যা খুশি ঢুকিয়ে ফেলার পর সকালে সেটা আবার বের করে নতুন করে গুছানো।
২। এখনই একটু স্মার্টলি প্যাকিং করা, যাতে যাত্রার দিন অযথা দৌড়াদৌড়ি না করতে হয়।
আমি দ্বিতীয় অপশনটাই সাজেস্ট করব। কারণ, প্যাকিং একটা শিল্প। এই শিল্পে দক্ষতা থাকলে অর্ধেক যাত্রাই স্বস্তিদায়ক হয়ে যায়। চলুন তবে, কীভাবে কম জায়গায় বেশি দরকারি জিনিস নেওয়া যায়, সেটার কিছু চমৎকার টিপস দেই।
১। ব্যাগ গুছানোর আগে, মাথা গুছান!
আপনার ব্যাগে তিন রকমের জিনিস থাকতে পারে—
যেগুলো একদমই দরকারি।
যেগুলো দরকারি কিন্তু অন্য কিছু দিয়ে রিপ্লেস করা যায়।
যেগুলো আপনার মনের দুঃখের ফসল, কিন্তু কাজে আসবে না।
প্রথমটা নেবেন, দ্বিতীয়টা নিয়ে ভাববেন, তৃতীয়টা ভুলে যাবেন।
২। রোলিং মেথড ব্যবহার করুন!
সাধারণ মানুষ কাপড় গুছায় ভাঁজ করে, বুদ্ধিমান মানুষ কাপড় গুছায় রোল করে।
কাপড় রোল করে গুছালে জায়গা কম লাগে।
এতে কাপড়ে ভাঁজ পড়ে না, আয়রনের ঝামেলাও কমে যায়।
ছোট জামাকাপড় (মোজা, আন্ডারগার্মেন্টস) রোল করে জুতার ভেতরে রেখে দিন, জায়গা বাঁচবে।
এটাকে বলে "স্মার্ট মুভ"।
৩। ভারী জিনিস পরে নিন!
আপনার ব্যাগের ওজন কমানোর সহজ উপায়—ভারি কিছু লাগেজে না রেখে পরে নিন!
যদি শীতের দেশে যান, ভারী জ্যাকেট পরে যান।
পায়ের সবচেয়ে ভারী জুতাটা পরে নিন, ব্যাগে ঢোকানোর দরকার নেই।
বিমানবন্দরে কিছুক্ষণ গরম লাগবে, কিন্তু লাগেজে ওজন বাড়বে না। এটা এক ধরনের আত্মত্যাগ।
৪। মাল্টিপারপাস জিনিস নিন!
একটা জিনিসের দুইটা কাজ হলে আরেকটা কেন নিবেন?
একটা ভালো মানের শাল নিন—ঠান্ডা লাগলে গায়ে জড়াতে পারবেন, আর ফ্যাশনেও খারাপ লাগবে না।
একটা চার্জার নিন, যাতে একসাথে ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব সব চার্জ দেওয়া যায়।
একজোড়া স্নিকার নিন, যা দিয়ে ট্রেকিংও করা যাবে আবার কফিশপেও বসা যাবে।
৫। টয়লেট্রিজ ও স্কিনকেয়ার—মিনি ভার্সন নিন!
আপনার বড় শ্যাম্পুর বোতল, ফুল সাইজের ফেসওয়াশ লাগবে না।
ছোট বোতলে শ্যাম্পু নিয়ে নিন, এতে জায়গাও কম লাগবে, ওজনও কমবে।
সামান্য পরিমাণ স্কিনকেয়ার নিন, যেন পাঁচ কেজির ব্যাগ হয়ে না যায়।
টুথপেস্টের ছোট টিউব নিন, বিশাল সাইজের দরকার নেই।
৬। ইলেকট্রনিক্স? যত কম, তত ভালো!
আপনার পুরো গ্যাজেট কালেকশন নিয়ে যেতে হবে না।
একটা ভালো পাওয়ার ব্যাংক রাখুন, যেন ফোন চার্জ ফুরিয়ে গেলেও সমস্যা না হয়।
একটা ওয়্যারলেস ইয়ারফোন নিন, যাতে তারের জটলায় পড়তে না হয়।
ডকুমেন্ট স্ক্যান করে রাখুন, সবকিছু ব্যাগে নেওয়ার দরকার নেই।
৭। প্লাস্টিক ব্যাগ নিন, লাগবেই!
এই জিনিসটাকে অবহেলা করবেন না।
ভেজা কাপড় বা নোংরা কিছু রাখার জন্য লাগবে।
জুতার সাথে অন্য কিছু যেন নোংরা না হয়, সেজন্য লাগবে।
ট্যুর শেষে বাড়তি জিনিস থাকলে সেটার জন্য লাগবে।
প্লাস্টিক ব্যাগ হচ্ছে আপনার ট্রিপের আনসাং হিরো।
আপনি যদি ট্রিপে গিয়ে প্রতিদিন হোটেল রুম এলোমেলো করে রেখে দেন, তাহলে এই প্যাকিং হ্যাকগুলো আপনার জন্য। কারণ, একদম গোছানো মানুষজন এমনিতেই প্যাকিং ভালো করে।
তাহলে এবার ব্যাগ গুছিয়ে ফেলুন, আর নিশ্চিন্ত মনে ট্রিপ উপভোগ করুন!
ট্রিপে গেলে আপনি কোন হ্যাক সবচেয়ে বেশি কাজে লাগান? কমেন্টে জানান!
Youman-এর সাথে থাকলে বাধা ভাঙবে অনায়াসে!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন