ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডেও মেন্টাল পিস পাওয়ার উপায়!
মধ্যরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়।
একটা অদ্ভুত শান্তি।
তবে সেই শান্তি টেকে না — ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রল করা শুরু করলেই, পরের এক ঘণ্টা যেন চোখ খোলা দুঃস্বপ্ন।
এই যে, আপনি একটু রেস্ট নিতে চেয়েছিলেন—
এবং শেষমেশ পেলেন চোখের ক্লান্তি, মনের বিরক্তি, আর ঘুমহীনতা।
এটাই আজকের জটিলতা।
আমরা অবসরে যাচ্ছি রিফ্রেশ হতে, ফিরে আসছি আরও ক্লান্ত হয়ে।
এত এত নোটিফিকেশন, ইনবক্স, আপডেট, লাইভ—সব মিলিয়ে আমরা যেন মন দিয়ে কিছুই করতে পারছি না।
তাই দরকার Digital Minimalism—একটা এমন জীবনযাপন পদ্ধতি, যেখানে আপনি ডিজিটাল থাকবেন, তবে নিজের নিয়মে।
১. ফোন আছে, তবে সেটাই জীবন না
আগে মানুষ বারান্দায় বসে চা খেত, এখন ফোন স্ক্রলে মুখ গুঁজে চা ঠান্ডা করে ফেলে।
আপনি কি সেই দলে?
ফোন আমাদের দরকার—কাজের জন্য, যোগাযোগের জন্য।
কিন্তু যখন সেটা আপনার মানসিক জায়গা দখল করে নেয়, তখন দরজায় টোকা দেয় বিষণ্ণতা।
Digital minimalism মানে—ফোন ছুঁড়েই ফেলে দেওয়া না।
বরং সেটাকে একটা সুন্দর দূরত্বে রাখা।
যেন আপনি ফোন চালান, ফোন আপনাকে না চালায়।
২. “বোর লাগছে” বলে স্ক্রল করা মানে মস্তিষ্ককে ছুটি না দিয়ে ওভারটাইম করানো
একটা সময় ছিল যখন অলস সময় মানেই গল্প লেখা হতো, গান শোনা হতো, বা আকাশ দেখা হতো।
এখন অলস মানেই — টিকটক, ইনস্টা, রিলস।
সেই স্ক্রল করে চলে যাওয়া সময়ে আপনি নিজের ভেতরের সেই শান্ত, বুদ্ধিমান মানুষটাকে হারিয়ে ফেলছেন।
অথচ একটু স্ক্রল বন্ধ করলেই দেখা যায়—
চুপচাপ বারান্দায় বসে থাকাটাই হয়ে উঠতে পারে দিনের সেরা সময়।
৩. আপনার ফোনের সবচেয়ে বুদ্ধিমান অ্যাপ: Airplane Mode
শুধু প্লেনে উঠলে নয়, মনের শান্তির জন্যও Airplane Mode অন করা যায়।
বসন্তের হাওয়া, বিকেলের রোদ, কিংবা রাতের বৃষ্টির শব্দ—এসব জিনিসে কোনো স্ক্রিনের দরকার হয় না।
সপ্তাহে অন্তত একদিন, এক ঘণ্টা ফোন অফ করে রাখুন।
দেখবেন — আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন, এতক্ষণ আপনি কী মিস করছিলেন!
৪. এক্সপেকটেশন ডিটক্স: সবাই সবসময় উত্তর দেবে, এমন ভাবা ঠিক না
অনেক সময় দেখা যায়, ফোন না ধরলে মানুষ রাগ করে।
মেসেজ না দেখলেই বলে — “এত ব্যস্ত কেন?”
এই যে, প্রত্যাশার চাপ — এটাও কিন্তু ডিজিটাল ওভারলোডের একটা ফর্ম।
আপনি সবার কাছে সবসময় অনলাইন থাকবেন — এই নিয়ম কে বানিয়েছে?
না বলা শিখুন।
“এই সময়টা আমার নিজের জন্য”—এই কথাটা বলা মানেই অহংকার না, এটা হচ্ছে নিজের প্রতি দায়িত্ব।
৫. আপনি কি আসলেই জানেন, কোন অ্যাপে কত সময় দিচ্ছেন?
একদিন ফোনের স্ক্রিন টাইম রিপোর্ট দেখুন।
হয়তো দেখবেন, যে অ্যাপটা “একটু দেখে নিই” বলে খোলেন, সেটাতেই চলে গেছে ৩ ঘণ্টা।
এই ৩ ঘণ্টা দিয়ে আপনি কী করতে পারতেন?
এই সময়টুকু ফিরিয়ে আনার নামই তো ডিজিটাল মিনিমালিজম।
আপনার ফোন একটা যন্ত্র।
আপনি মানুষ।
যন্ত্র আপনাকে সাহায্য করবে, আপনি যন্ত্রের গোলাম হবেন না—এটাই হলো ডিজিটাল শান্তির সূত্র।
দিনশেষে, আপনি যদি ঘুমাতে যাওয়ার আগে শান্তি খুঁজে পান,
সকালে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে হয় — “আহা, আজকের দিনটা আমার”,
তাহলেই বুঝবেন — আপনি নিজের সময়ের নিয়ন্ত্রণে আছেন।
“স্ক্রিন কম, শান্তি বেশি” এই সিম্পল এক ফর্মুলা আপনাকে দিতে পারে অনেক কিছু।
#YoumanWellbeing | আপনার মনের জন্য একটু সময়, একটু সহজ থাকা।
“বড় হয়ে কী হব?” এই টেনশন বাদ! Youman আছে, শেখার মজা নিন, সিদ্ধান্ত নিন একদম অনপয়েন্ট !
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন