ওভারওয়ার্ক? ব্যাটারি শেষ? এবার রিচার্জের সময়!

 ওভারওয়ার্ক? ব্যাটারি শেষ? এবার রিচার্জের সময়!

(১) "আমি আর পারছি না.."

সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিস বা ক্লাসের জন্য দৌড়, সারাদিন ডেডলাইন, অ্যাসাইনমেন্ট, মিটিং, একটার পর একটা চাপ! সন্ধ্যায় মনে হলো, "একটু রেস্ট নেবো।" কিন্তু রেস্ট নেওয়ারও টাইম নেই! মাথার মধ্যে চিন্তার বাসা—"এত কাজ পড়ে আছে! রেস্ট নিলে সময় নষ্ট!"

এরপর?
মেজাজ খিটখিটে, সবকিছুতেই বিরক্তি, কাজের প্রতি আগ্রহ নেই। আর সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার—মন খারাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণও খুঁজে পাচ্ছেন না!

জানেন, এটাই Burnout!

(২) আসলে Burnout কী?

ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলে ফোন যেমন অটো-অফ হয়ে যায়, ঠিক তেমনই অতিরিক্ত ওয়ার্কলোড আমাদের ব্রেন ও বডিকে "শাটডাউন" করে দেয়!

সিম্পটম গুলো চিনে নিন:

  • সবসময় ক্লান্ত লাগে, কিন্তু ঘুমেও ঠিকমতো বিশ্রাম হয় না
  • ছোটখাটো কাজে বিরক্তি চলে আসে
  • কোনো কিছুতে আগের মতো আগ্রহ থাকে না
  • প্রোডাক্টিভ হতে গেলে আরও বেশি স্ট্রেস লাগে

ব্যাটারি যখন শেষের দিকে যায়, তখন কিন্তু জোর করে কাজ করলেও কোনো লাভ হয় না!

(৩) Burnout থেকে বের হওয়ার ৫টি সহজ স্টেপ!

Step 1. "পজ" বাটন চাপুন!
প্রথমেই যা করতে হবে—কাজের চাপ থেকে সামান্য বিরতি নিতে হবে। যদি মনে করেন, "না, আমি থামতে পারবো না!"—তাহলে সেটাই সিগন্যাল যে আপনার বিরতি নেওয়া দরকার!

  • অফিস হলে অন্তত দুই দিন লিভ নিন
  • যদি একেবারে লিভ না নিতে পারেন, তাহলে কাজের গতি কমান
  • "আমার রেস্ট দরকার"—এই কথাটা নিজেকে বলুন, এবং গিল্টি ফিল করা বন্ধ করুন!

Step 2. "ব্রেন ডাম্প" করুন!
আপনার মাথায় হাজারটা চিন্তা জমে আছে। "এটা করবো, ওটা করবো, ওটা এখনই করতে হবে!"
একটা খাতা নিন বা মোবাইল নোট খুলুন। যা যা মাথায় আসছে লিখে ফেলুন। কিন্তু কেন?

যখন চিন্তাগুলো কাগজে চলে আসে, তখন ব্রেনের উপর চাপ কমে যায়।

Step 3. "Me Time" ইনস্টল করুন!
কাজ থেকে যতই বিরতি নিন, যদি নিজেকে সময় না দেন, তাহলে লাভ নেই।

দৈনিক ৩০ মিনিট "Me Time" রাখুন!

  • বই পড়ুন (অফিস রিপোর্ট না! একদম নিজের পছন্দের বই)
  • গান শুনুন বা সিনেমা দেখুন
  • কোথাও নিরিবিলি বসে শুধু মেঘ দেখুন! (হ্যাঁ, এটা আসলেই কাজ করে!)
  • ফোন-নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন!

Step 4. নিজের সাথে কথা বলুন!
সবচেয়ে বড় বিষয়—নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, "আমি কি সত্যিই এই কাজ করে ভালো লাগছি?"

  • আপনি কি এমন কাজ করছেন, যেটা একদমই এনজয় করছেন না?
  • আপনি কি "সবার খুশির জন্য" সবকিছু করে যাচ্ছেন?
  • আপনি কি কাজ থেকে বের হয়ে একটু নিজের জন্য সময় নিতে পারছেন?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করুন। কারণ Burnout শুধু কাজের চাপে হয় না, নিজের চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে ভারসাম্য না থাকলেই হয়!

Step 5. "না" বলতে শিখুন!
সত্যি কথা বলতে, আমাদের বেশিরভাগ Burnout হয় কারণ আমরা "না" বলতে পারি না!

✅ কেউ বললো, "এটা একটু করে দাও!"—আপনার মনে হলো, "যাও, না বলি!"
✅ সবাই ওভারটাইম করছে, আপনি না করলে কি খারাপ দেখাবে?
✅ বন্ধুরা ঘুরতে যাচ্ছে, কিন্তু আপনার রেস্ট দরকার—কিন্তু "না" বলতে পারছেন না!

কিন্তু মনে রাখবেন—নিজের মানসিক শান্তি সবার আগে!

সুতরাং, "না" বলতে শিখুন! কারণ একবার Burnout হলে, সেটার থেকে বের হওয়া অনেক কঠিন!

(৪) এবার নিজেকে রিচার্জ করুন!

কাজ করবেন, কিন্তু নিজের জন্যও সময় রাখবেন!
যদি মনে হয়, ব্যাটারি শেষ—তাহলে কাজের গতি কমান, ছোট ছোট আনন্দ নিন, নিজের সাথে ভালো আচরণ করুন!

আপনার ব্রেন কম্পিউটার না—যেটা সারাদিন অন থাকলেও চলবে!

নিজেকে একটু ভালোবাসুন, কারণ আপনার সুস্থ থাকা সবচেয়ে জরুরি!

লাইফ-হ্যাক চাই? ডিসিশন-হ্যাক চাই? Youman-এ আছেন তো? তাহলে তো কোনো টেনশন নাই!




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগে কেন? সলিউশন এখানে !

ভুয়া অফার থেকে নিজেকে বাঁচানোর স্মার্ট উপায় !

যে কৌশলে সহজে পড়া মনে রাখতে পারবেন